দৈনিক নয়াদিগন্ত


জীবন ও কর্ম

রূপকথার নায়ক

এ অঞ্চলের লোকসাহিত্য ও সংস্কৃতি লিপিবদ্ধ করতে ব্যাপক তৎপরতা শুরু করেছিলেন ড. দীনেশ চন্দ্র সেন, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ও কবি মনসুরুদ্দিনের মতো সর্বসৃজনশীল ব্যক্তিরা। পরবর্তী সময়ে সেই ধারা নিরন্তর গতিশীল রাখতে কাজ করেছেন যারা; ড. আশরাফ সিদ্দিকী তাদেরই একজন।

দিবসযামী

মাদার মাদার বলে নার্সকে ডাকলেন, ‘এখানে নাশতা দাও। পত্রিকার লোক। তোমার খালুর কাছে এসেছে।’ নাশতা চলে এলো। তারপর বাইরে থেকে হঠা’ই উঁকি মারল কিশোরী এক মেয়ে ‘দাদু কী করো? খেয়েছ? তাড়াতাড়ি গোসল করে নিয়ো। মেয়েটি কাজ করে এ বাসায়। এদের নিয়েই তার সংসার। এখানে থেকেই ওরা বড় হয়, আবার এখান থেকেই ওদের বিয়ে দেয়া হয়। মজার ব্যাপার হলো, বিয়ের পর স্বামী-সংসার নিয়েও তারা এখানেই থেকে যায়। এ নিয়েই তার দিবসযামী।

রূপকথার নায়ক

সে অনেক দিন আগের কথা। মায়ের কোলে বসে গল্প শুনত ছেলেটি। রূপকথার গল্প। শুয়ো রাজা-দুয়ো রাজার গল্প। মা সমীরণ নেসার কোল থেকেই তার রূপকথার রাজ্যে প্রবেশ। সাহিত্যের পোকা তখনই মাথার ভেতর গেঁথে যায়। নিজেকে তখন রূপকথার রাজকুমারই মনে হতে থাকল। সেই ঘোর থেকেই ছোটবেলার আশরাফ বড় হয়ে হলেন ড. আশরাফ সিদ্দিকী। ১৯৯১ সালে তিনি লিখতে পেরেছিলেন ‘বাংলাদেশের রূপকথা’।
বাবা-মায়ের কাছ থেকে পেলেন রূপকথার পরশপাথর। তো সাহিত্যের দিকে ঝুঁকলেন কিভাবে? ‘মামাতো ভাই আবু সাঈদ চৌধুরীর উৎসাহে কিশোর বয়সেই সাহিত্যের দিকে ঝুঁকে পড়েছিলাম।’ আর তিনি প্রথম লিখতে শুরু করেন ক্লাস সিক্সে পড়ার সময় থেকে। তখন লিখেছিলেন ‘নববর্ষা’ শিরোনামে একটি কবিতা। এটি লেখার পেছনে উসাহ জুগিয়েছিলেন তার পাঠশালার শিক্ষক কবি আজিজ রহমান সিদ্দিকী ‘সবাই তাকে চাঁদ মিয়া বলেই ডাকত। তিনি প্রকৃতি বিষয়ক নানা কবিতা স্পষ্ট হস্তাক্ষরে লিখে স্কুলের দরজা-জানালায় এঁটে রাখতেন। আমাদেরও প্রচুর কবিতা শোনাতেন ও কবিতা লিখতে বলতেন। স্যারের উসাহও আমাকে প্রথম কবিতা লিখতে সাহস দিয়েছিল। পরবর্তীকালে রবীন্দ্রনাথ, নজরুলের কবিতাই আমাকে বেশিমাত্রায় আকৃষ্ট করেছে। তারাই আমার প্রিয় কবি। তাদের গান শুনতে ভালো লাগে।’ স্মৃতি হাতড়ে বলে গেলেন আশরাফ সিদ্দিকী।

চাকুরী জীবন

তার জন্ম ১৯২৭ সালের ১ মার্চ টাঙ্গাইলের নাগবাড়ি গ্রামে। অর্থাৎ তার নানাবাড়িতে। নানা এবাদত উদ্দিন চৌধুরী ও দাদা সলিম উদ্দিন সিদ্দিকী ছিলেন সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের লোক। তবে দাদা ছিলেন কিছুটা বিবাগী দরবেশ ধরনের। তিনি পীরের মুরিদ ছিলেন। তার দাদীর নাম আফসন নিসা। তিনি ছিলেন সংসারী ও ধর্মপ্রাণ। আশরাফ সিদ্দিকীর বাবা ডা: আবদুস সাত্তার সিদ্দিকী ছিলেন মেধাবী ছাত্র। পাঠশালায় ছাত্রবৃত্তি পান। দশম শ্রেণীতে পড়াকালীন স্বরাজ আন্দোলনে যোগ দেন। পরবর্তীকালে ডাক্তারি পাস করে চিকিৎসক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। বাবা প্রায় ৫০ বছর ইউনিয়ন পঞ্চায়েত, ইউনিয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি তার আপন চাচাতো বোন সমীরণ নেসাকে বিয়ে করেছিলেন। সমীরণ নেসার বাবার নাম ছিল এবাদত উদ্দিন চৌধুরী। তিনি ছিলেন জমিদার। সমীরণ নেসা ছিলেন বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি মরহুম আবু সাঈদ চৌধুরীর ফুফু ও সাবেক স্পিকার মরহুম আবদুল হামিদ চৌধুরীর বোন। তিনি ছিলেন অনেক প্রতিভাময়ী। অনেক ছড়া, প্রবাদ ও বিয়ের গীত মুখস্থ ছিল তার মা সমীরণ নেসার। পাশাপাশি ছিলেন একজন আদর্শ গৃহিণীও।

পারিবারিক ঐতিহ্য

ড. আশরাফ সিদ্দিকী লেখা ও সম্পাদনায় এ যাবত প্রকাশিত হয়েছে ৭৫টি গ্রন্থ। ১৯৫০ সালে প্রকাশিত হয় কবির কালজয়ী প্রথম কাব্যগ্রন্থ “তালেব মাস্টার ও অন্যান্য কবিতা”। ২৮টি কবিতা নিয়ে রচিত এই কাব্যগ্রন্থের দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয় ১৯৬৩ সালে। ১৯৫৫ সালে প্রকাশ পায় তাঁর আরও দুটি কবিতার বই “বিষকন্যা” ও “সাত ভাই চম্পা “। ১৯৫৮ সালে কবি প্রকাশ করেন “উত্তর আকাশের তারা”। ১৯৭৬ এ প্রকাশ পায় “কুঁচ বরণ কন্যে”। স্ত্রীর মৃত্যুর পর পর লেখা কবিতাগুলো প্রকাশিত হয় ১৯৯৭ সালে নাম “সহস্র মুখের ভীড়ে”। লোকসাহিত্য বিষয়ে গবেষণা ধর্মী গ্রন্থ “লোকসাহিত্য” প্রকাশিত হয় ১৯৬৩ সালে। পরবর্তীতে একের পর এক প্রকাশ করে যান, আবহমান বাংলার লোককথা। “কিংবদন্তীর বাংলা”, “লোকায়ত বাংলা”, “আবহমান বাংলা”, “শুভ নববর্ষ”, “Folkloric Bangladesh”, “Bengali Riddles”, “Our Folklore Our Heritage”, “Tales from Bangladesh”, “Bengali Folklore” বইগুলো সেগুলোর মাঝে অন্যতম। বাংলার কিংবদন্তি এবং লোককাহিনী নিয়ে ড. সিদ্দিকী’র উপস্থাপনায় ৭০ এবং ৮০’র দশকে দীর্ঘ দিন ধরে ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত হয় দর্শকনন্দিত লোকনাট্য “হীরামন”, “মেঠোসুর” এবং “একতারা”।

পাঠশালায়

জীবনের প্রথম পাঠ শুরু নানাবাড়ির পারিবারিক পাঠশালায়। এ পাঠশালা থেকে দুই টাকা মাসিক বৃত্তি পেয়েছিলেন তিনি। তার শিক্ষক ছিলেন কবি আজিজ রহমান সিদ্দিকী ওরফে চাঁদ মিয়া। ‘পরে রতনগঞ্জ মাইনর স্কুলে ভর্তি হয়েছিলাম। স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন আমার বাবা। এ স্কুল থেকেও চার টাকা মাসিক বৃত্তি পেয়েছিলাম।’ বললেন আশরাফ সিদ্দিকী। তখন কি স্কুল পালিয়েছিলেন তিনি? ‘না, আমি কখনো স্কুল পালাইনি। স্কুল পালানোর মতো কোনো কারণই ঘটেনি। এখনকার ছেলেমেয়েরা কেন যেন স্কুল পালায়। হয়তো ওদের স্কুল ভালো লাগে না।’
এখনো কি মাঝে মধ্যে গ্রামে যান? ‘হ্যাঁ, যাই তো। তবে ছেলেমেয়েরা যেতে দিতে চায় না। কিন্তু আমার গ্রাম খুব ভালো লাগে। আমাদের গ্রামটি ছিল সবুজ, এখনো প্রায় তেমনটি আছে। খুব একটা পরিবর্তন হয়নি। গ্রামের তিন দিকেই নদনদী, যেন আদরিণী কন্যার মতো চার দিকের গ্রামগুলোকে ঘিরে রেখেছে। গ্রামের উত্তরেই কয়েক শ’ একরের বিশাল বিল তয়লা সুন্দরীর বিল। এগুলো নিয়ে ছিল অনেক কিংবদন্তিও।’ ছেলেবেলায় নিশ্চয়ই অনেক দুষ্টুমি করেছেন? ‘সেই বয়সের শিশুরা যা করে, আমরাও তা-ই করেছি। তবে কোনো মন্দ কাজে যাইনি। তাই তো এখনো ফেলে আসা কিশোরবেলায় ফিরে যেতে মন চায়। ফিরতে পারলে বেশ হতো। আর এখনকার ছেলেমেয়রা কেমন শৈশব কাটায় তা তো দেখেছ? ওদের জীবনটা কেমন যেন, ঠিক বুঝি না!’

জীবনের মোড়

পারিবারিক পাঠশালার গণ্ডি পেরিয়ে ময়মনসিংহ জেলা স্কুলের সপ্তম শ্রেণীতে ভর্তি হন। থাকতেন ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে, মামা আবদুল হামিদ চৌধুরীর বাসায়। ১৯৪২ সালে ফরাসি ভাষায় লেটারসহ এ স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন এবং ১০ টাকা মহসিন বৃত্তি পান। আশরাফ সিদ্দিকীর বাবা চেয়েছিলেন, ছেলে ডাক্তার হবে। বাবার ইচ্ছানুসারে আনন্দমোহন কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। কয়েক মাস অসুস্থ থাকায় বিজ্ঞান বিভাগে আর পড়া হলো না। পরে বেলগাছিয়া কৃষি ও ভেটেরিনারি কলেজে ভর্তি হওয়ার পর আবারো অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপরই শান্তিনিকেতনে চলে যান। সেখানে বাংলায় অনার্স নিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে থাকেন। এ থেকে তার বিভিন্ন লেখা পত্রপত্রিকায় নিয়মিত প্রকাশিত হতে থাকে। শান্তিনিকেতন থেকেই ইন্টারমিডিয়েট ও বাংলায় অনার্স করেন। পরে বাংলায় এম এ পাস করেন ১৯৫০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এবং আমেরিকার ইন্ডিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ ও পিএইচডি অর্জন করেন ফোকলোর বিষয়ে। আশরাফ সিদ্দিকী বললেন, ‘নিয়তিই আমাকে সাহিত্যাঙ্গনে নিয়ে আসে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আর শান্তিনিকেতনে থাকার সময়ই কবিগুরুর সান্নিধ্য পেয়েছিলাম। আমার রবীন্দ্রনাথের শান্তি নিকেতন গ্রন্থে এ ব্যাপারে বিস্তারিত লেখা আছে।’
কর্মজীবনের শুরুতেই আশরাফ সিদ্দিকী টাঙ্গাইল কলেজের বাংলা বিভাগে অধ্যাপনা শুরু করেন। পরে ১৯৫১ সালের ১৫ জুলাই রাজশাহী সরকারি কলেজে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। তিনি ছিলেন প্রখ্যাত পণ্ডিত ড. মুহম্মদ শহিদুল্লাহর স্নেহের। তারই আগ্রহে সে বছর নভেম্বর মাসে গবেষণার জন্য ডেপুটেশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। ‘পরবর্তীতে বাংলা উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালক, বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক, বাসসের চেয়ারম্যান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ ও প্রেস ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে গেছি। কর্মজীবনে প্রবেশ করার পর বিয়ে করেছিলাম।’

ঘর-সংসার

আশরাফ সিদ্দিকী বিয়ে করেন উম্মে সাঈদা চৌধুরীকে ‘আমাদের বিয়ে হয় ২৩ ডিসেম্বর ১৯৫১ সালে। বিয়ে ঠিক করেন আমার আপন মামাতো ভাই বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী (পরে রাষ্ট্রপতি), বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ মরহুম শামসুল হক, তার স্ত্রী অধ্যাপিকা আফিয়া খাতুন এবং আমার বাবা ডা: আবদুস সাত্তার সিদ্দিকী।’
উম্মে সাঈদা চৌধুরী (পরে সিদ্দিকী) প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ ও সাহিত্যিক অধ্যক্ষ আবদুর রব চৌধুরীর দ্বিতীয় মেয়ে। আজিমপুর বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ছিলেন ৩২ বছর ও স্কুলের প্রভাতকালীন দায়িত্বে ছিলেন। উম্মে সাঈদা সিদ্দিকীর অসংখ্য খ্যাতিমান ছাত্রীদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও একজন।
‘সাঈদাকে বধূরূপে পেয়ে আমার বাবা-মা অত্যন্ত প্রীত ছিলেন। আমার শিক্ষা বিভাগের চাকরিতে আমাকে রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রামে এবং শেষে দু’বার উচ্চশিক্ষার্থে দীর্ঘ দিন (১৯৫৮-৬০; ১৯৬৩-৬৬) আমেরিকা থাকতে হয়। তো এ সময়ে আমার স্ত্রী তার আপন দক্ষতায় সন্তান ও সংসার সামলিয়েছেন। যার কিছু প্রমাণ আমাকে পাঠানো লেখা তার চিঠিগুলো।’ নিচে সেই চিঠিটি তুলে ধরা হলো। এটি স্বামীর উদ্দেশে স্ত্রী লিখেছিলেন ১৯৫৯ সালের ১৪ এপ্রিল।
”হে প্রিয় আমার, তোমার ওখানে এত দিনে বসন্তের সমারোহ। আর আমাদের দারুণ গ্রীষ্মে গাত্রদাহ শুরু হয়েছে। গরমে আম-কাঁঠাল পাকে আর আমরা বস্তি এলাকায় বস্তাপচা হয়ে মরছি। কী যে অসহ্য তার অভিজ্ঞতা, তা তো তোমার আছেই। যা হোক তোমরা যে ৎধঃব-এ বসন্ত উৎসব শুরু করেছ, এ তো ভাবনার বিষয়! শেষে না প্রেম রোগটি বাজিয়ে বসো। চিঠির ভেতরে এত কথা তুমি লিখলে কী করে গো? কলম তোমার একবারও থমকে দাঁড়াল না? যদি কেউ দেখত তবে কেমন হতো? ছি: ছি: ছি:, একেবারে লাজলজ্জা ধুয়ে খেয়েছ। মার্কিন দেশে গিয়ে মার্কিনা ভাবধারায় প্রভাবান্বিত হয়ে উঠেছ। যা হোক চুপি চুপি একটু বলে রাখি, চিঠিটা বারবার পড়েছি আর বারবার বুকে বেজেছে সুখের মতো ব্যথা। এ অনুভূতির তুলনা নেই। তাই আবার লিখছি ‘কানে কানে শুধু বলো একবার তুমি যে আমার, ওগো তুমি যে আমার।’ চিঠিটার প্রতি ছত্রে ছত্রে ফুটে উঠেছে আমিময় তোমার রূপ। আবার বলছি, আমাকে ভাবতে দাও, অনুভব করতে দাও ‘তুমি যে আমার’। এমনি মিষ্টি কথাগুলো পড়তে ভালো লাগে আবার লজ্জায় চোখের পাতা বুজেও আসে। ‘থাহিদ্দার অস্তিতে’ বিশ্বাস করলে কিন্তু ঠকবে। তাহলে পাঁচ হাজার বছর আগেকার বুড়ি এসে তোমার ঘাড় মটকাবে। ওসব আজেবাজে চিন্তা না করে বর্তমানের সাঈদার ও তার তিনটি সন্তানের মুখ চেয়ে, ভালোমতন পড়। ভালোমতন পড়ে দেশে ফিরতে হবে তো?”
স্ত্রীর পাশাপাশি সন্তানেরাও তাদের বাবাকে চিঠি লিখত। ঢাকা থেকে ১৯৬৩ সালের ১৫ ডিসেম্বরে বাবাকে লেখা মেয়ের চিঠি
‘বাবা, আমার আদর নিয়ো। তোমার চিঠি পেয়ে খু-ব-ই খুশি হয়েছি। তোমার কথা আমার মনে হয় আর কান্না পায়। তুমি তাড়াতাড়ি চলে এসো। আমরা ভালো আছি। তুমি কেমন আছো? আমাকে তোমার ফটো পাঠিও। রিফি তোমাকে খোঁজে। চিঠি দিয়ো। ইতি আদরের রীমা।’
চিঠিগুলো দেখতে দেখতে আশরাফ সিদ্দিকী আবার বলতে লাগলেন, ‘অলি (সাঈদার আদরের নাম ‘অলি’) আমেরিকায় উচ্চশিক্ষার জন্য এবং স্কলারশিপ পেয়ে বিদেশ যেতে সে কোনোক্রমেই রাজি ছিল না। কারণ ছোট ছেলেমেয়েকে রেখে গেলে ওরা যদি ভালোভাবে মানুষ না হয়। আমি তো আগে থেকেই বিদেশে পড়ে আছি। শেষে মাকেও যদি শিশুরা কাছে না পায়, এই ভাবনা সারাক্ষণ মনজুড়ে থাকত।
কথার মাঝে থামিয়ে জানতে চাওয়া হলো, বিয়ের আগে তাকে দেখা, প্রেমট্রেম ছিল? কথা শুনে অবাক না হয়ে জানালেন, ‘হ্যাঁ, দেখেছি। বোরখা পরে মুখ ঢেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসত। আমি দেখতাম, কিন্তু কখনো কথা হতো না। না, প্রেমট্রেম করিনি। এরপরই তো আমাদের বিয়ে হয়ে গেল।’
নিশ্চয়ই বিয়ের পর অনেক বকাঝকা করত? প্রশ্নটা অনেক সাহস নিয়ে করতেই প্রতিবাদের স্বরে বলে উঠলেন, ‘না, না, ও অনেক শান্ত ছিল। আমার ওপর কখনোই রেগে থাকত না। আমি রাগ করলে বলত, রাগ করছো কেন? কিন্তু সে কখনো রাগ করত না। তবে ছেলেমেয়েদের ওপর রাগ করে একটু বকাঝকা করত। যাতে ওরা মানুষ হয়।’
লেখালেখি নিয়ে তার ভাবনা কেমন ছিল? ‘সন্ধ্যার পরে বাসায় ফিরতাম। তারপরই লিখতাম। কারণ রাত ভালো লাগে বলে লেখাজোখা রাতের বেলায়ই লিখতাম। বেশি রাত জাগতে ভালো লাগে না। আবার সকালে ঘুম থেকে উঠে যাই। তো অলি (স্ত্রী) কখনো কখনো পাশে থাকত। আমার লেখার ব্যাপারে উৎসাহ দিত। খেয়াল রাখত কেউ যাতে আমাকে বিরক্ত না করে। আমি যখন লিখতাম তখন পেছনে এসে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকত। লেখা শেষ হলে ওকেই প্রথম পড়তে দিতাম। পড়া শেষ হলে বলত, ‘খুব ভালো হয়েছে। খুব ভালো হয়েছে। বাবারে, কত কথাই তো মনে পড়ে। মাঝে মাঝে সে হাসিঠাট্টা করত। আমার ভালো লাগত। জামাই ঠকানো হয় না? জামাই ঠকানোতে বেশ মজা হয়েছিল। টক খাওয়ানো হয়, তিতা খাওয়ানো হয়। ব্যাপারটায় বেশ মজা পেয়েছিলাম। এখন তো এসব ব্যাপার উঠেই যাচ্ছে।’
ডান দিকের দেয়ালের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেললেন তিনি, ‘ওই যে দেয়ালে টানানো মানুষটাকে দেখছো, যে মানুষটা আমার আগেই চলে গেল। এটা ঠিক হলো না। একজন কবিকে ফেলে চলে যাওয়া ঠিক হয়নি; কিন্তু কী করা যাবে। আমি একা রয়ে গেছি, একা হয়ে আছি। হ্যাঁ মনে পড়ে, খুব মনে পড়ে।’ আশরাফ সিদ্দিকীর স্ত্রী ৬৪ বছর বয়সে মারা যান ১৯৯৫ সালের ২৮ ডিসেম্বর।
পাঁচ ছেলেমেয়ের মধ্যে বড় ছেলে সাইদ সিদ্দিকী (ব্যবসায়ী), কন্যা নাহিদ আরেফা মির্জা শিক্ষকতা করছেন, দ্বিতীয় কন্যা তাসলিম আরেফা চৌধুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্র বিজ্ঞানের প্রফেসর। কনিষ্ঠ কন্যা রিফাত সামিনাও শিক্ষকতা করছেন একটি স্কুলে। ছোট ছেলে রিয়াদ সিদ্দিকী বড় ভাইয়ের সাথে ব্যবসায় আছেন।

আপন আয়নায় দেখা

এক জীবনে আশরাফ সিদ্দিকীর অর্জনের খাতায় হিসাব না মেলানোই বুদ্ধিমানের কাজ। নতুন স্বপ্নের কথা জানতেই অকপটে বলেন, ‘না, আর কোনো স্বপ্ন নেই। তবে যে বইগুলো বের হয়নি, সেগুলো বের করা। পুরনো বইগুলোকে নতুন করে বের করা। ছেলেমেয়েরা বড় হয়েছে। ওরা পড়াশোনা শেষ করে যার যার জায়গায় ভালো আছে। এই তো। এই জীবনে আর কোনো আক্ষেপও নেই। ‘তালেব মাষ্টার� কবিতাটি আমার নিজের ভেতর প্রভাব ফেলেছে। অনেক ভাষায় কবিতাটি অনুবাদ হয়েছিল। আমার খুব প্রিয় কবিতা। ডিগ্রি ক্লাসের পাঠ্যসূচিতে ছিল কবিতাটি। সুভাষ দত্ত আমার ‘গলির ধারের ছেলেটি’ নিয়ে ‘ডুমুরের ফুল’ নামে যে সিনেমা করেছিল, সেটি আমার খুব ভালো লেগেছিল। দেশে-বিদেশে অনেক পুরস্কার পেয়েছিল সিনেমাটি। নিজেও একসময় প্রচুর সিনেমা দেখেছি। পালিয়েও খুব সিনেমা দেখতাম। মনে আছে, দেবদাস দেখেছি, অনেকবার দেখেছি, গৃহদাহও দেখেছি অনেকবার।’ অক্লান্ত পরিশ্রম করে বাংলার লোককথা, রূপকথা সংগ্রহ করেছেন আশরাফ সিদ্দিকী। কিন্তু বর্তমানে আমাদের নিজম্ব সংস্কৃতি হারাতে বসেছে। তার বদলে জায়গা নিচ্ছে অপসংস্কৃতি। এই নিয়ে কবির ভাবনা জানতে চাইলে আত্মবিশ্বাসের সাথে বলেন, ‘হ্যাঁ আমাদের লোকসাহিত্য টিকে থাকবে তো। থাকবে না কেন? তোমরা কি আমাদের বই পড়বে না, আমাদের গান শুনবে না? শুনবে তো।’

ব্যস্ততাকে দিয়ে ছুটি

ফেলে আসা দিনে একটুও অবসর পেতেন না আশরাফ সিদ্দিকী। একসময় ফাউন্ডেশনের খরচেই তিনি আমেরিকার বিভিন্ন স্থান, ইউকে, প্যারিস, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, তুরস্ক, ইরান প্রভৃতি দেশ সফর করেছেন। রাতের পর রাত গবেষণা ও সাহিত্যচর্চায় নিজেকে ডুবিয়ে রাখতেন। জীবনের ৮৬তম বছরে এসে সে ব্যস্ততা মিলিয়ে গেছে। তবুও একজন সৃষ্টিশীল মানুষ কখনো অলস সময় কাটান না। আশরাফ সিদ্দিকী নিজেই বলেন, �এখনো নিয়ম করে ঘুমাতে যাই। আবার আল্লাহর নাম করে ঘুম থেকে উঠি। সকাল-বিকেল বাসার ছাদে হাঁটাহাঁটি করি। কয়েকটি পত্রিকায় নিয়মিত টুকটাক লেখা দিই। কোনো অনুষ্ঠানের নিমন্ত্রণ থাকলে সেখানেও যাওয়ার চেষ্টা করি। কেউ বাসায় এলে তার সাথে আলাপ জমাতেও ভালো লাগে।’

ড. আশরাফ সিদ্দিকী

জন্ম : টাঙ্গাইল জেলায় ১৯২৭ সালের ১ মার্চ
বাবা : ডা: আবদুস সাত্তার সিদ্দিকী
মা : সমীরণ নেসা।
বিয়ে : ১৯৫১ সালের ২৩ ডিসেম্বর
স্ত্রী : উম্মে সাঈদা সিদ্দিকী
সন্তান : পাঁচ সন্তানের জনক
শিক্ষাগত যোগ্যতা : বাংলায় এমএ পাস ১৯৫০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। আমেরিকার ইন্ডিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ ও পিএইচডি অর্জন করেন ফোকলোর বিষয়ে।
পেশা : বিভিন্ন কলেজে অধ্যাপনা, বাংলা উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালক, বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক, বাসসের চেয়ারম্যান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ ও প্রেস ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান ছিলেন।
প্রকাশিত গ্রন্থ : তালেব মাষ্টার ও অন্যান্য কবিতা (১৯৫০), বিষকন্যা (১৯৫৫), দাঁড়াও পথিক বর (১৯৯০), রাবেয়া আপা (১৩৬২), রবীন্দ্রনাথের শান্তি নিকেতন (১৯৭৪), লোক সাহিত্য (১৯৬৩), বাংলার মুখ (১৯৯৯), প্যারিস সুন্দরী (১৯৭৫), বাংলাদেশের রূপকথা (১৯৯১), আরশী নগর, শেষ কথা কে বলবে (১৯৮৮), গুনীন (১৯৮৯) উল্লেখযোগ্য।
পুরস্কার : একুশে পদক, শিশু সাহিত্যে বাংলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৬৪), ইউনেস্কো পুরস্কারসহ তিনি আরো অনেক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন।


Demise of Dr Ashraf Siddiqui - Media coverage

19 March 2020    
1. Ex-Bangla Academy DG Ashraf Siddiqui passes away - The Daily Financial Express 
 Read this News
2. Renowned poet-folklorist Dr Ashraf Siddiqui dies - The Daily Sun,  Read this News
3. লেখক-গবেষক আশরাফ সিদ্দিকী আর নেই - The Daily jugantor,  Read this News
4. লোকসাহিত্যিক ড. আশরাফ সিদ্দিকী আর নেই - The Daily Bangladesh Protidin, Read this News
5. লোক গবেষক ও লেখক আশরাফ সিদ্দিকী আর নেই - Boishakhi Tv, Read this News
6. চলে গেলেন লোক গবেষক ড. আশরাফ সিদ্দিকী – The Daily kalerkantho, Read this News
7. লোক গবেষক ও সাহিত্যিক ড. আশরাফ সিদ্দিকী আর নেই, News24 TV, Read this News
8. শ্বাসকষ্টজনিত কারণে মারা গেলেন ড. আশরাফ সিদ্দিকী, Channel i online, Read this News
9. চলে গেলেন কবি-লোক গবেষক ড. আশরাফ সিদ্দিকী, bdlive24.com, Read this News
10. জন্মমাসেই ৯৩ বছর বয়সে চলে গেলেন কবি ড. আশরাফ সিদ্দিকী, Natun-barta.com, Read this News
11. চলে গেলেন লোক গবেষক ও সাহিত্যিক আশরাফ সিদ্দিকী, joynewsbd.com, Read this News         
12. চলে গেলেন লোক গবেষক আশরাফ সিদ্দিকী, The Daily Bhorer kagoj, Read this News
13. সাহিত্যিক ও গবেষক ড. আশরাফ সিদ্দিকী মারা গেছেন, The Daily janakantha,  Read this News
14. চলে গেলেন কবি ও লোক গবেষক ড. আশরাফ সিদ্দিকী, The Daily Ajker Patrika,  Read this News
15. বিশিষ্ট কবি-লোকবিজ্ঞানী ড. আশরাফ সিদ্দিকী আর নেই, Purboposhchimbd.com, Link: Read this News
16. ড. আশরাফ সিদ্দিকী মারা গেছেন, bd24live.com, Read this News
17. প্রখ্যাত সাহিত্যিক-লোক বিজ্ঞানী আশরাফ সিদ্দিকী আর নেই, observerbd (Bangla), Read this News
18. চলে গেলেন কবি-লোক গবেষক ড. আশরাফ সিদ্দিকী, Nagorik TV, Read this News                   
19. সাহিত্যিক ড. আশরাফ সিদ্দিকী আর নেই, Arthosuchak.com, Read this News
20.  জন্মমাসেই চলে গেলেন কবি ড. আশরাফ সিদ্দিকী, The Daily Manobkantha, Read this News

20 March 2020    
1.Poet Ashraf Siddiqui dies, The Daily New Age, Read this News
2. Poet Ashraf Siddiqui passes away, The Daily Independent, Read this News 
3. Ashraf Siddiqui passes away, The Daily Sun, Read this News
4. Ashraf Siddiqui passes away, The Daily Star, Read this News
5. চলে গেলেন লোকসাহিত্যিক ড. আশরাফ সিদ্দিকী, The Prothom alo, Read this News 
6. কবি-লোক গবেষক ড. আশরাফ সিদ্দিকী আর নেই, Banglanews24.com, Read this News 
7. লোক গবেষক আশরাফ সিদ্দিকী আর নেই, The Daily Bonik Barta, Read this News 
8. চলে গেলেন কবি গবেষক ড. আশরাফ সিদ্দিকী, The Daily jugantor, Read this News
9. ড. আশরাফ সিদ্দিকী আর নেই, The Daily Bangladesh Protidin, Read this News
10.  না ফেরার দেশে আশরাফ সিদ্দিকী, The Daily Somokal, Read this News 
11. জন্ম মাসেই চলে গেলেন আশরাফ সিদ্দিকী, The Daily Nayadiganta, Read this News
12. সাহিত্যিক ড. আশরাফ সিদ্দিকীর ইন্তেকাল, The Daily Ittefaq, Read this News
13. লোকসাহিত্যিক ড. আশরাফ সিদ্দিকীর ইন্তেকাল, The Daily Inqilab, Read this News
14. জন্ম মাসেই চলে গেলেন কবি আশরাফ সিদ্দিকী, The Daily Bhorer kagoj, Read this News
15. চলে গেলেন ড. আশ্রাফ সিদ্দিকী, The Daily amader shomoy, Read this News
16. কবি-লোক গবেষক আশরাফ সিদ্দিকীর জানাজা সম্পন্ন, Banglanews24, Read this News
17. Folklorist and poet Dr Ashraf Siddiqui passes away, Dhaka Tribune, Read this News
18. চলে গেলেন কবি-লোক গবেষক ড. আশরাফ সিদ্দিকী, The daily Campus, Read this News
19. চলে গেলেন লোক গবেষক ড. আশরাফ সিদ্দিকী, The Daily Vorer pata, Read this News
20. Poet-folklorist Dr Ashraf Siddiqui no more, banglanews24, Read this News
21. চলে গেলেন কবি আশরাফ সিদ্দিকী, daily janakantha, Read this News
22. চলে গেলেন লোকসাহিত্যিক আশরাফ সিদ্দিকী, khola Kagoj, Read this News
23. লোকসাহিত্যিক ড. আশরাফ সিদ্দিকী আর নেই, The Daily Bangladesher alo, 3rd page. 

                                                             শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য ড. আশরাফ সিদ্দিকী কে রাখা হয় তাঁর ধানমন্ডি বাসভবনে

                                                                             ড. আশরাফ সিদ্দিকীর জানাজা হয় ধানমন্ডি শাহী ঈদগাহ মসজিদে 


Article about Dr. Ashraf Siddiqui

1. Dr. Ashraf Siddiqui: Poet or Folklorist?

by Tasneem Siddiqui, Publish The daily observer Wednesday, 4 March 2015 Read this article

2. The life and legacy of Dr Ashraf Siddiqui: Reflections of a grandson

by Dr C Rashaad Shabab, Publish The daily Star, March 22, 2020, Read this article

3. আড্ডার গল্প—আশরাফ সিদ্দিকী

by কাজী জহিরুল ইসলাম, Publish risingbd, March 26, 2020, March 22, 2020, Read this article

4. তাঁর জীবনদর্শন ও সাহিত্যবৈশিষ্ট্য

by আমিনুর রহমান সুলতান, Publish প্রথম আলো, March 22, 2020, Read this article

5. বাবার বিয়ে

by তাসনিম সিদ্দিকী, Publish প্রথম আলো, ০৭ এপ্রিল ২০২০ Read this article

বাবার বিয়ে লেখা নিয় কিছু সুন্দর মন্তব্যঃ- 

Ashraful Kabir "এক কথায় অসাধারণ একটি লেখা; শুধু যে তথ্যবহুল একটি লেখা তাই নয়, লেখাটি আবেগ এবং ভালবাসায় মোড়ানো। খুবই ভাল লেগেছে; শুভেচ্ছা এবং ধন্যবাদ লেখককে এবং প্রথম আলোকে আন্তরিক ধন্যবাদ।

Khaled Sydney: বাংলা লোক সাহিত্যের কিংবদন্তী, কবি আশরাফ সিদ্দিকীর এমন বর্ণীল এবং ঘটনাবহুল বিয়ের বর্ণনা পড়া একটি বিরল অভিজ্ঞতা। কবির জীবনের অতীতের একটি বিশেষ ঘটনাকে এমন সুন্দর ভাবে গল্পের ছলে সংলাপসহ জীবন্তভাবে উপস্থাপনা করা খুব একটা সহজ ব্যাপার নয়। এই কঠিন কাজটিই রচয়িতা করতে পেরেছেন অসাধারণ নিখুঁত ভাবে। এটি অবশ্যই একটি সুখ পাঠ্য।

Shamsul Alam Khokon: I feel proud as his student, you feeling proud as his daughter. Maybe he is no more with us but I think he is still alive among all through his creation in Bengali Literature. May Almighty Allah grant him the highest place in Jannah.

Syed Mohibul Islam: Beautiful expression. He was my principal at Jagannath college. Now I am a retired Principal of govt. College. May Allah grant him eternal peace.

Hasna Awal:অসাধারণ স্মৃতিচারন। আশরাফ ছিদ্দিকিকে জানি "তালেব মাস্টার "কবিতা মধ্য দিয়ে। ওনার মেয়ের লিখা পড়ে বুঝতে পারলাম যথাযথ উত্তরাধিকারি তিনি রেখে গেছেন।


Interview of Dr. Ashraf Siddiqui

1. নববর্ষে ইলিশ না খেয়ে বারো রকম ভর্তা খাওয়া যেতে পারে : ড. আশরাফ সিদ্দিকী

ড. আশরাফ সিদ্দিকীর জন্ম ১৯২৭ সালে টাঙ্গাইল জেলায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এমএ ডিগ্রি অর্জনের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফোকলোর বিষয়ে এমএ ও পিএইচডি করেন। কর্মজীবনে তিনি বিভিন্ন কলেজে অধ্যাপনা, কেন্দ্রীয় বাংলা উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালক, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক, বাসসের চেয়ারম্যান ও প্রেস ইন্সটিটিউটের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। ড. সিদ্দিকীর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ৭৫। ১৯৫০ সালে প্রকাশিত হয় তার কালজয়ী প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘তালেব মাস্টার ও অন্যান্য কবিতা’। এ অঞ্চলের লোকসাহিত্য ও সংস্কৃতি লিপিবদ্ধ করতে যে কর্মকাণ্ড শুরু করেছিলেন ড. দীনেশচন্দ্র সেন, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ও কবি মনসুরুদ্দিনের মতো সর্বসৃজনশীল ব্যক্তিরা, পরবর্তী সময়ে সেই ধারা নিরন্তর গতিশীল রাখতে যারা কাজ করেছেন- ড. আশরাফ সিদ্দিকী তাদেরই একজন। যুগান্তরের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে ড. সিদ্দিকী বাংলা নববর্ষ উদযাপন, আবহমান বাংলার লোকসংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের স্বরূপ বিশ্লেষণসহ অন্যান্য বিষয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন

প্রকাশ: দৈনিক যুগান্তর, ১৩ এপ্রিল, ২০১৬ Read this Interview

2. আমি লোকসাহিত্যকে আধুনিক পর্যায়ে নিয়ে গেছি

প্রবীণ শিক্ষাবিদ, লেখক, গবেষক ড. আশ্রাফ সিদ্দিকী। তিনি এ দেশের অন্যতম প্রধান লোকসাহিত্যিক। লোককথা, লোকগাথা, প্রবাদ, রূপকথা ইত্যাদি ক্ষেত্রে লিখেছেন তিনি। তাঁর ফেলে আসা জীবন ও কাজের ভুবনের মুখোমুখি হয়েছেন ওমর শাহেদ।

প্রকাশ: দৈনিক কালের কণ্ঠ, ২ জুন, ২০১৭ Read this Interview